নভেম্বর ১১, ২০১৯
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তান্ডব: জেলায় ৪৭ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত
নিজস্ব প্রতিনিধি: ঘূর্ণিঝড় “বুলবুল” এর ভয়াল ছোবলে সাতক্ষীরা উপক‚ল লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। উপক‚লবর্তী শ্যামনগর, আশাশুনি, কালিগঞ্জ উপজেলায় অসংখ্য কাঁচা ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে। উপড়ে পড়েছে হাজার হাজার গাছ। আশ্রয় কেন্দ্র গুলো থেকে মানুষ বাড়িতে ফিরে তাদের ঘরবাড়ি মেরামতের কাজ শুরু করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করতে স্থানীয় প্রশাসন, সেনা বাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশসহ বেসরকারি সংগঠন গুলো কাজ করছে। ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র তাÐবে জেলায় আনুমানিক ৪৭ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে ১৭ হাজার এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩০ হাজার। এছাড়াও ৫ হাজার ১৭টি মৎস্য ঘের এবং ১৫ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন সম্পূর্ণ ও ১০ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন ধান আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুই হাজার হেক্টর জমির সবজি, পান, সরিষা ও কুলসহ অন্যান্য ফসলের ক্ষতি হয়েছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, সাতক্ষীরার উপক‚লবর্তী শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালীনি, মুন্সিগঞ্জ, রমজাননগর ও কাশিমাড়িসহ আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর, আনুলিয়া, খাজরা ও শ্রীউলা এলাকাসহ অন্যান্য উপজেলার অধিকাংশ কাঁচা ঘর নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এসব এলাকার মৎস্য ঘের ও ফসলের ক্ষেত। উপড়ে পড়েছে হাজার হাজার গাছগাছালি। রাস্তার ওপর গাছ পড়ে অনেক এলাকার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে ও খুঁটি উপড়ে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে এলাকাগুলো। এদিকে, শ্যামনগর উপজেলার ভেটখালী ইউনিয়নের তারাণীপুরে দেয়াল চাপায় ভ্যানচালক পলাশ ও তার স্ত্রী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া শনিবার রাত ৯টার দিকে শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের চকবারা গ্রামের আবুল কালাম (৬০) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। অপরদিকে তালা উপজেলার মুহন্দি গ্রামে গাছ চাপা পড়ে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী জানান, ভারতে পশ্চিমবঙ্গের উপক‚ল হয়ে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল রোববার ভোর রাত ২টা থেকে ৮১ কিলোমিটার বেগে সাতক্ষীরা উপক‚লে আঘাত হানে। শনিবার রাত থেকে রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত সাতক্ষীরায় ১৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে উপক‚লীয় এলাকার অধিকাংশ কাঁচা ঘরবাড়ি নষ্ট হয়েছে। এ অঞ্চলের অধিকাংশ মাছের ঘের ও ধানের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। গাছপালা পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কাজ করছে। জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল জানান, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে সাতক্ষীরা জেলার ৪৭ হাজার কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে কাজ চলছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার কাছ শুরু হয়েছে। তিনি আরও জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য নগদ ৩০ লাখ টাকা ও এক হাজার বান টিন বরাদ্দ করা হয়েছে। 8,483,208 total views, 5,377 views today |
|
|
|